বগুড়ায় আলুর কেজি ৩৬ টাকা

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: বগুড়ায় ৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে আলু। শনিবার সকালে বগুড়ার রাজাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

ক্রেতারা বলছেন, সঠিক নজরদারির অভাবের কারণেই আলুর বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

অপরদিকে বিক্রেতারা বলছেন, যেমন দামে আলু পাচ্ছি তেমন দামে বিক্রি করছি। যতদিন কম দামে আলু পাব ততদিন কম দামে বিক্রি হবে।

জানা যায়, বগুড়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আর বি কোল্ড স্টোরেজের ১২ মেট্রিক টোন আলু ভোক্তা পর্যায়ে ৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি আলু কিনতে পারছেন। তবে অন্য জাতের পাকড়ি আলু পাইকারি ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আলু কিনতে আসা পলাশ প্রামাণিক নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘আলু কিনলে অন্য সবজি কেনার টাকা থাকে না। আমাদের কথা কেউ ভাবে না। যে আলু আগে ১৫-২০ টাকা কেজি দরে কিনেছি সেই আলু আজ ৩৬ টাকা কেজি দরে কিনলাম। আগের সপ্তাহে ৪৪ টাকা কেজি দরেও কিনেছি। ব্যবসায়ীরা আমাদের সঙ্গে যখন যা খুশি তেমন দাম হাঁকাচ্ছে।’

আল-আমিন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘বাধ্য হয়েই গেল সপ্তাহে আলু ৪৪ টাকা কেজি দরে কিনেছিলাম। শনিবার এসে দেখলাম ৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কতদিন এই দাম থাকে সেটাই এখন দেখার বিষয়।’

আফরোজা ইয়াসমিন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘হিমাগারের আলু দাম কমেছে। কিন্তু যারা এই আলু খেতে অভ্যস্ত না তারা কোন আলু খাবে? পাকড়ি আলু কিনলাম ৫২ টাকা কেজি দরে। আমরা সব ধরনের আলুর দাম কমানোর দাবি জানাই।’

মিলন শেখ নামে আলুর পাইকারি বিক্রেতা বলেন, ‘আমরা হিমাগার থেকে যে দামে আলু পাব সেই অনুযায়ী কিছু লাভ রেখে আলু বিক্রি করব। আমরা হিমাগার থেকে কম দামে আলু পাওয়ায় এখন সরকারি নির্ধারিত ৩৬ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করতে পারছি।’

আব্দুস সোবহান নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘হলেন্ডার আলু ৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত কয়েকদিন এ আলুর দাম ছিল ৪২-৪৪ টাকা কেজি। আমরা এখন আলু পাচ্ছি বলেই ৩৬ টাকা দরে বিক্রি করতে পারছি। যখন পাব না তখন আর বিক্রি করতে পারব না।’

বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলায় গত উৎপাদন মৌসুমে ৯৪ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। আলু উৎপাদিত হয়েছে ২১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৮০ মেট্রিক টন। সংরক্ষণে জটিলতা ও খরচের কারণে উৎপাদক পর্যায়ে অর্থাৎ কৃষকরা ভরা মৌসুমে অনেকটা কম দামে আলু বিক্রি করে দেন। সেই আলুর মধ্যে দুই জেলার ৫৬টি হিমাগারে পাঁচ লাখ পাঁচ হাজার ২৬৮ মেট্রিক টন সংরক্ষণ করেছেন ব্যবসায়ী ও মজুতদাররা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই জেলার হিমাগারে এবার রেকর্ড পরিমাণ আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাড়ছে আলুর দাম।

রাজাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় রাজাবাজারে শনিবার থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি করে আলু কিনতে পারছেন। আশা করছি জেলা প্রশাসন এভাবে সহযোগিতা করলে আলুর বাজার স্থিতিশীল থাকবে।’

জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসান চৌধুরী (ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ শাখা) বলেন, ‘শনিবার সকাল থেকে রাজাবাজারে আর বি কোল্ড স্টোরেজর ১২ মেট্রিক টোন আলু ভোক্তা পর্যায়ে ৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন কোল্ড স্টোরেজ রাজাবাজারে এই কার্যক্রম পরিচালনা করবে।’